২৫ নভেম্বর, ২০১০

চার শ মানব ভাস্কর্য পানির নিচে

সমুদ্রের মাছেরা অবাক দৃষ্টিতে ঘুরে ঘুরে দেখছে নতুন এক জগৎ। এখানে বিভিন্ন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে মানবসমান চার শ মানব ভাস্কর্য। আপাতত মাছেরাই সে জগতের মুগ্ধ দর্শক। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এ জগতের নাম ‘দ্য সাইলেন্ট ইভল্যুশন’। কানকুনের মেক্সিকান-ক্যারিবিয়ান বিচ রিসোর্টে সৈকতের জলের ৩০ ফুট নিচে বিস্ময়কর এ জগৎ সৃষ্টি করা হয়েছে। ২৭ নভেম্বর দর্শকদের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে।

পৃথিবীর ইতিহাসে পানির নিচে এত বড় ভাস্কর্য প্রদর্শনী আর কখনও হয়নি। ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রদর্শনীর ৪০০ মানব ভাস্কর্য তৈরি করেছেন ব্রিটিশ ভাস্কর জেসন ডিকেইরস টেইলর। দুই বছর আগে তিনি এ কাজে হাত দেন। দিন-রাত পরিশ্রম করার পর অবশেষে তার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। প্রদর্শনীটি তিনি মা-বাবার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন। এ প্রদর্শনীতে দেখা যায়, ৪০০ বিভিন্ন বয়সী মানব-মানবী নানা ধরনের ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে। এদের প্রত্যেকের মধ্যেই নিজস্ব অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে এক বিশাল মানবজগৎ জীবন্ত হয়ে আছে জলের তলায়।

পানির নিচে এমন শিল্পকর্মের প্রদর্শনী এটাই তার প্রথম নয়। এর আগে তিনি গ্রানাডা এবং ইংল্যান্ডেও ছোট আকারে এমন প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।

ভাস্কর্যগুলো তৈরি করা হয়েছে ডাঙাতেই। আর এ মাসের শুরু থেকে সেগুলো পানির নিচে স্থাপনের কাজ শুরু হয়। গোটা মাস কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অবশেষে সব কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। মেক্সিকোসহ দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শক এই প্রদর্শনী দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপক্ষো করছেন। প্রদর্শনটি নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় এরই মধ্যে হইচই শুরু হয়ে গেছে।

ভাস্কর্যগুলো তৈরিতে শিল্পী ব্যবহার করেছেন ১২০ টন সিমেন্ট, বালি ও নুড়ি পাথর, ৩ হাজার ৮০০ মিটার ফাইবার গ্লাস, ৪০০ কেজি সিলিকন ও ৮ হাজার মাইল লম্বা লাল ফিতা।

এছাড়া ৩০ ফুট পানির নিচে সেগুলো স্থাপনের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ১২০ ঘণ্টা। আর পুরো ব্যাপারটিতে খরচ  হয়েছে আড়াই লাখ ডলার।

ভাস্কর্যগুলো স্থাপনের কাজ করতে গিয়ে শিল্পী ও তার সহযোগীদের ২৫ হাজারবার পিঁপড়া আর মশার কামড় খেতে হয়েছে। এছাড়া সামুদ্রিক মাছের কামড় খেতে হয়েছে ২০ বার। ভাস্কর টেইলর তার অবশ্য সব খরচ আর পরিশ্রমের সঙ্গে মজা করে এই বিষয়টিও যোগ করেছেন।

শেষ করার আগে আরেকটি তথ্য, এই ভাস্কর্যগুলোতে এমন সব উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে যে দীর্ঘদিন পানিতে থাকলেও কোনও সমস্যা হবে না। আর পর্যটকদের জন্য এগুলো স্থায়ীভাবে পানিতেই থাকবে।  (সূত্র: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম)