১৪ ডিসেম্বর, ২০১০

৩৯ বছর ধরে আতঙ্কের কারণ হয়ে আছে একটি নাপাম বোমা

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই দিনে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের শলুয়া নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর মধ্যে সংগঠিত হয় প্রচণ্ড লড়াই। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে পাকবাহিনীর ছোড়া কামানের গোলায় ভারতীয় মিত্রবাহিনীর দুটি সাজোয়াযান ধ্বংসসহ ৭ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ১৪জন জোয়ান (শিখ সেনা) মারা যান। সংবাদ পাওয়া মাত্রই ভারতীয় বোমারু বিমান থেকে খান সেনাদের ঘাটিতে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা হয় একটি নাপাম বোমা। দুর্ভাগ্যক্রমে বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে শলুয়া বাজার সংলগ্ন জেলেদের একটি দীঘির মধ্যে পড়ে। ৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩ ফুট ব্যস বিশিষ্ট বোমাটির গায়ে খেলা ইংরেজী ভাষার বিবরণ থেকে জানা যায়- NAPAM BOMB, MADE IN RASIA, WEIGHT-500 K.G., 100 YERAS AGO. ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা রমেন চ্যাটার্জী এ প্রতিবেদককে জানান, লড়াইয়ের পরই আমি সহ বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই অবিস্ফোরিত বোমাটি দীঘির প্রায় ৬/৭ ফুট পানির নিচে পড়ে আছে। সেখান থেকে বোমাটি উদ্ধার করে দীঘির পাড়ে আনা হয়। খবর পেয়ে তৎকালীন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ঘটনাস্থলে এসে বোমাটি দেখে ও এর ভয়াবহতা অনুধাবন করে তাৎক্ষনিকভাবে বোমাটি পানি ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। যা আজো ওই দীঘিতে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে আছে এবং যা এলাকার মানুষের মধ্যে একটি আতঙ্কের কারণ হয়ে আছে। তিনি আরো জানান, আমিসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বোমাটি সামরিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে উদ্ধার করে বিস্ফোরণ অথবা মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে আসলেও অদ্যবধি স্বাধীনতার ৩৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেননি। এলাকাবাসীর আশাবাদ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখবেন। (সূত্র: অনলাইন)