১৩ আগস্ট, ২০১১

বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে দ্য ইকোনমিষ্ট

আবারও ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক দ্য ইকোনোমিস্ট পত্রিকায় বাংলাদেশ বিষয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। শনিবার The poisonous politics of Bangladesh শিরোনামে প্রকাশিত ওই সংখ্যাটি বাজারে এসেছে। দ্য ইকোনোমিস্ট এর অনলাইন সংস্করণে 'ইন দ্য নেম অব দ্য ফাদার' শিরোনামে বাংলাদেশের রাজনীতির কঠোর সমালোচনা করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতি এখনো ব্যক্তি-পর্যায়ে এবং বিষাক্ত আকারে রয়েছে। আর রাজনীতির কথা বলতে গিয়ে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা আসে, এতে বাঙ্গালী জাতি আশার আলো দেখেছিল। এর কারণ আওয়ামীলীগ তার প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রতি বিরূপ আচরণ করে আসছে। গেল সপ্তাহে দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পলাতক ছেলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। যদিও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে প্রকতবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সময়ে শেখ হাসিনার নামেও ১৩টি মামলা করা হয়েছিল। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে এই দুই পরিবারই ক্ষমতায় এলে একে-অপরের প্রতি প্রতিহিংসায় লিপ্ত থাকে। ২০০৬ সাল পযন্ত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইকোনমিস্টের ভাষায়, এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির স্বাভাবিক ঘটনা। দ্বি-দলীয় ব্যবস্থায় পারিবারিক কলহ-বিবাদই হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন রাজনীতির মূলকথা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালে নিহত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীর শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। অপরদিকে মিসেস জিয়া ১৯৮১ সালে নিহত আরেক রাষ্ট্রপতির বিধবা স্ত্রী। বর্তমান সময়ে বিএনপি সংসদ বর্জন করে রাজপথকে বেছে নিয়েছে। দ্য ইকোনমিস্ট কঠোর সমলোচনা করেছেন বাংলাদেশের সামপ্রতিক সংবিধান সংশোধন নিয়ে। আর এর উদাহরণ হিসেবে ইকোনমিষ্ট ব্যবহার করেছে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজপাকসে যেমনটা করেছিলেন, ঠিক শেখ হাসিনাও তেমনটাই করছেন। বলা হয়েছে এ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। আগাম সংবাদ হিসেবে ইকোনমিষ্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে, বিএনপি নতুন ব্যবস্থায় নির্বাচনে যাবে কি-না সেটা বলা মুশকিল। যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার নিয়েও আগাম প্রতিবেদন ছেপেছে পত্রিকাটি সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় সংঘটিত নৃশংসতার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। ইকোনমিষ্টের ভাষায় বলা হচ্ছে এ বিচারকে দেখা হচ্ছে দলীয় ভিত্তিতে। তারা আরও উল্লেখ করে বলেছে ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর দেশটির বেশিরভাগ মানুষই দরিদ্র। আর তাই সরকারের জনপ্রিয়তা এখনো অক্ষুণ্ন আছে। অর্থনীত্ও ভালোই চলছে। মনমোহন সিং এর্ আসন্ন বাংলাদেশ সফরে নিয়ে ইকোনমিষ্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বলেছে যে, সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে ওই সফরে স্বাক্ষর হতে পারে বেশ কয়েকটি চুক্তি। আরো অনেক বিষয় নিয়েই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে। গত ৩০ জুলাই বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি আপত্তিজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো পত্রিকাটি। এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ চার পৃষ্ঠার একটি দীর্ঘ প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদলিপি তাদের অনলাইন সংস্করণে ছাপা হলেও মূল পত্রিকায় ছাপা হয়নি। তবে পরে শুক্রবার চিঠিপত্র কলামে ছাপা হয়। (সূত্র: অনলাইন)