মঙ্গলবার সাফল্যের সঙ্গে প্রথম
মানবহীন মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করলো চীন৷ শোনা যাচ্ছে, ২০২০ সালের মধ্যে
মহাকাশে একটি স্পেস স্টেশন তৈরির করার পরিকল্পনাও রয়েছে দেশটির৷ বার্তা
সংস্থা সিনহুয়া ও ডয়চে ভেলে জানায় যে, এই মানববিহীন মহাকাশযান ‘সেন চৌ-৮’
গোবি মরুভূমি থেকে স্থানীয় সময় ভোর ৫.৫৮ মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হয়৷ তারা
জানায়, ঘন্টায় প্রায় দুশো কিলোমিটার বেগে ছুটে যায় মহাকাশযানটি৷ শুধু তাই
নয়, ‘সেন চৌ-৮’ নামের ঐ মহাকাশযানটি আরেকটি মহাকাশযান ‘থিয়ান কোং-১'-এর
কাছে আগামী দু'দিনের মধ্যেই পৌঁছোবে বলে জানান এই প্রকল্পের একজন
কর্মকর্তা৷ চীনের মূল লক্ষ্য হল ২০২০ সালের মধ্যে মহাশূন্যে এমন একটি স্পেস
স্টেশন তৈরি করা, যেখানে নভচারীরা মাসের পর মাস তাঁদের কাজ এবং গবেষণা চালিয়ে
যেতে পারবে৷ ঠিক যেমনটি করা হচ্ছে অন্যান্য আন্তর্জাতিক মহাকাশযানের
ক্ষেত্রে৷ আর এর জন্য যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে অত্যন্ত
দক্ষতার প্রয়োজন৷ কারণ, দু'টি মহাকাশযানই একই অক্ষে আবর্তিত হচ্ছে৷ পৃথিবীর
চারপাশে ঘন্টায় প্রায় ২৮ হাজার কিলোমিটার বেগে মাহাকাশযান দু'টি ছুটছে৷
তাই মহাকাশযান দু'টি কাছাকাছি এলে, যাতে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে-সেদিকে
তীব্র নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা৷ ১৯৯০ সালে চীন রুশ প্রযুক্তির সাহায্য
তাদের মহাকাশযান তৈরির এ প্রকল্প শুরু করে৷ ২০০৩ সালে নভচারীসহ একটি
মহাকাশযান পাঠানো হয় মহাশূন্যে৷ চীনই ছিল বিশ্বের তৃতীয় দেশ, যে দেশটি
মহাকাশে নভচারী পাঠানোর সম্মান অর্জন করে৷ এর আগে শুধুমাত্র রাশিয়া এবং
অ্যামেরিকাই তাদের নভচারী মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হয়৷ এরপর এ বছর, চীনের
জাতীয় দিবসের ঠিক এক দিন আগে, ‘থিয়ান কোং-১' মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়৷
সেটা ছিল চীনের জন্য এক বিরাট সাফল্য৷ সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও
সেই মহাকাশ সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও ফ্লাইট
কন্ট্রোল সেন্টার থেকে তা পর্যবেক্ষণ করেন৷ তবে একথা ঠিক যে চীন এখনো
অনেক পিছিয়ে রয়েছে৷ মাহাশূন্যে মহাকাশযান নিয়ে ছোটাছুটি, গ্রহ থেকে
গ্রহান্তরে আসা-যাওয়া এবং গবেষণায় অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে অ্যামেরিকা এবং
রাশিয়া৷ ভুলে গেলে চলবে না, ৬০'এর দশকে এই দু'টি দেশই মহাকাশে তাদের প্রথম
মহাকাশযান পাঠিয়েছিল৷যদি ‘সেন চৌ-৮’ প্রকল্প কোনো অঘটন বা সমস্যা ছাড়া
সফল হয়, তাহলে আগামী বছর চীন আরো দু'টি মহাকাশযান পাঠাবে মহাশূন্যে৷ আর
তার মধ্যে একটি মহাকাশযানে নভচারী পাঠানোর কথাও ভেবে দেখছে দেশটি৷ বার্তা
সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, দু'জন মহিলা নভচারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু
হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই৷ যদি তাঁদের বেছে নেওয়া হয়, তাহলে মহাকাশে তাঁরাই হবেন
প্রথম মহিলা নভচারী৷ তাই এখন শুধু অপেক্ষার পালা৷
