বিগ ব্যাং থিউরির সেই জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের আজ ৭০তম জন্মদিন। ১৯৪২ সালের ৮
জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্ম গ্রহণ করেন হকিং। মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য ‘বিগ ব্যাং থিউরি’ দিয়ে
তিনি বিশ্বব্যাপী হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। হকিংয়ের বাবা ড. ফ্র্যাঙ্ক হকিং
ছিলেন জীববিজ্ঞানের গবেষক। আর মা ইসাবেল হকিং ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী। ২১ বছর বয়সে হকিং দূররারোগ্য মোটর
নিউরোন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এখন তিনি স্থায়ী পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছেন।
দেহ পঙ্গু থাকলেও সজাগ মস্তিস্ক নিয়ে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের
চিন্তায় সর্বদা সে মত্ত। স্টিফেন হকিংয়ের নিজস্ব ওয়বসাইটের
তথ্যমতে, বর্তমানে তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘থিওরেটিক্যাল কসমোলজি
সেন্টার’ এ গবেষণা পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইয়ে তিনি মহাবিশ্বের আগমনের রহস্য নিয়ে বেশ কিছু তত্ত্ব
দেন। সেখানেই তিনি বিখ্যাত ‘বিগ ব্যাং তত্ত্ব’টি আলোচনা করেছিলেন। হকিং বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় শুধু আমি বা
আমার মতো তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরাই নন, আমরা সবাই জানতে চাই আমরা কোথা
থেকে এসেছি৷’ মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে
ঈশ্বরের ভূমিকা থাকার বিষয়টি বিগব্যাং থিউরিতে তিনি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন না। তবে মৃত্যুর পর
স্বর্গ-নরক সম্পর্কে একটু ভিন্ন মতামত দিয়েছিলেন তিনি। ব্রিফ হিস্ট্রি বইয়ে হকিং
বলেছেন, অভিকর্ষ শক্তির সূত্রের মতো পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্র কার্যকর
রয়েছে, তাই একদম শূন্যতা থেকেও মহাবিশ্বের সৃষ্টি সম্ভব এবং তা
অবশ্যম্ভাবী। ‘স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৃষ্টি’ হওয়ার কারণেই আমরা মহাশূন্যে অনেক
কিছুর অস্তিত্ব দেখতে পাচ্ছি।’ ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ‘কে
দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, যারা মৃত্যু তথা অন্ধকারকে ভয়
পায়, তাদের জন্য স্বর্গ হচ্ছে এক কল্পকাহিনী। তবে অতি সম্প্রতি ঈশ্বরের
অস্তিত্বকে নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন হকিং।তিনি বলেন, মানুষের
মস্তিস্ক কম্পিউটারের মতো। কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ যখন আর কাজ করে না, তখনই
কেবল তার মৃত্যু ঘটে। অচল কম্পিউটারের যেমন পরবর্তী জীবন বলে কোনও কথা নেই,
তেমনি মানুষের ক্ষেত্রেও মৃত্যুর পরে স্বর্গ-নরক বলে কিছু নেই। স্বর্গ
তাদের কাছেই কেবল কাল্পনিক একটি গল্প, যারা অন্ধকারে ভয় পান। নিজের
সম্পর্কে হকিং বলেছেন, ‘আমি ৪৯ বছর আগ থেকেই মৃত। তাই আমি এখন আর
মরতে ভয় পাই না। আমি যা করতে চেয়েছিলাম তার অনেক কিছুই করতে সক্ষম হয়েছি’। বিশ্ব নিয়ে তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ ‘দ্য গ্র্যান্ড
ডিজাইন’।