১৫ ডিসেম্বর, ২০১০
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্রগুলো
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পর চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান নির্মাণ করেন ‘জীবন থেকে নেওয়া’। ফখরুল আলম পরিচালিত ‘জয়বাংলা’ নামের ১৯৭০ সালে নির্মিত হয় একটি ছবি যা, ১৯৭২ সালে মুক্তি পায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জহির রায়হান নির্মাণ করেন ‘স্টপ জেনোসাইড’ ও ‘এ স্টেট ইজ বর্ন’ নামের দুটো ডকুমেন্টারি ফিল্ম। আলমগীর কবির তৈরি করেন ‘লিবারেশন ফাইটার্স’। এছাড়া বাবুল চৌধুরী ‘ইনোসেন্ট মিলিয়ন্স’ নামে একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম ছবি চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘ওরা ১১ জন’ মুক্তি পায়। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবির কাহিনীতে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার সাহসিকতা ও দেশমাতৃকার জন্য জীবনপণ লড়াইয়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় আরো বেশ কটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি, এর মধ্যে অন্যতম সুভাষ দত্ত নির্মিত ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, আনন্দ পরিচালিত ‘বাঘা বাঙালি’, মমতাজ আলী পরিচালিত ‘রক্তাক্ত বাংলা’ প্রভৃতি। প্রয়াত চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবির ১৯৭৩ সলে নির্মাণ করেন ‘ধীরে বহে মেঘনা’। ১৯৭৩ সালে খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’, কবীর আনোয়ারের ‘শ্লোগান’, আলমগীর কুমকুমের ‘আমার জন্মভূমি’ মুক্তি পায়। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ফুটে ওঠে ১৯৭৪ সালে নির্মিত নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ ছবিতে। ওই বছর মুক্তি পায় চাষী নজরুল ইসলামের ‘সংগ্রাম’ ও এস আলীর ‘বাংলার ২৪ বছর’। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় হারুন-অর-রশীদের ‘মেঘের অনেক রং’। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পাওয়া আবদুস সামাদের ‘সূর্যগ্রহণ’ ছবিতেও এসেছে মুক্তিযুদ্ধের কথা। ১৯৮১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ছবি উপহার দেন শহীদুল হক, মুক্তি পায় তার ‘কলমীলতা’ ছবিটি। পরে স্বল্পদৈর্ঘ্যরে ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রাধান্য ছিল মোরশেদুল ইসলামের ‘আগামী’, তানভীর মোকম্মেলের ‘হুলিয়া’ ও ‘নদীর নাম মধুমতি’, নাসিরউদ্দিন ইউসুফের ‘একাত্তরের যীশু’, মোস্তফা কামালের ‘প্রত্যাবর্তন’, আবু সাইয়ীদের ‘ধূসর যাত্রা। একাত্তরে মার্কিন সাংবাদিক লিয়ার লেভিনের ধারণ করা ফুটেজ নিয়ে তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ নির্মাণ করেন প্রামাণ্য ছবি ‘মুক্তির গান’। দেবাশীষ সরকারের ‘শোভনের একাত্তর’, রফিকুল বারী চৌধুরীর ‘বাংলা মায়ের দামাল ছেলে’, জাঁ-নেসার ওসমানের ‘দুর্জয়’, হারুনুর রশীদের ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’, বাদল রহমানের ‘ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ’, ছটকু আহমেদের ‘মুক্তিযুদ্ধ ও জীবন’, মান্নান হীরার ‘একাত্তরের রঙপেন্সিল’। ১৯৯৪ সালে হুমায়ূন আহমেদ এর পরিচালনায় নির্মিত হয় ‘আগুনের পরশমণি’। ১৯৯৮ সালে নির্মিত হয় দ্বিতীয় ছবি ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’। চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৯৮ সালে নির্মাণ করেন আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’। ২০০৪ সালে চাষী নজরুল ইসলাম নির্মাণ করেন ‘মেঘের পর মেঘ’। ২০০৪ সালে হুমায়ুন আহমেদ তৈরি করেন ‘শ্যামলছায়া’ এবং তৌকীর আহমেদ নির্মাণ করেন ‘জয়যাত্রা’। চলতি বছর মুক্তিযোদ্ধা নির্মাতা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ‘গেরিলা’ নামে মুক্তিযুদ্ধের ছবির কাজ শুরু করেন। তবে তা এখনো মুক্তি পায়নি নানা জটিলতায়। (সূত্র: ইন্টারনেট)