১৩ মার্চ, ২০১১

ক্ষতিগ্রস্থ জাপান


undefined
ইতিহাসের ভয়াবহতম ভূমিকম্পে জাপানের বহু অঞ্চলে এখন কেবল ক্ষতের চিহ্ন। সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা হচ্ছে মিয়াগি, ফুকুশিমা এবং ইওয়াতে প্রিফেকচার। এসব স্থানের উপকূলবর্তী এলাকাগুলো প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে সুনামির আঘাতে। কোথাও কোথাও তিন-চার তলা পর্যন্ত সুনামির বিশাল ঢেউ আঘাত হানে। মিয়াগি সহ অনেক উত্তরাঞ্চলীয় শহর শনিবারও বিদ্যুতবিহীন ছিলো। উপদ্রুত অঞ্চলের মানুষরা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ভীড় জমিয়েছেন। সেখানে তাদের খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। শনিবার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা প্রকাশ পেতে থাকে। ভূমিকম্প ও সুনামির আতঙ্কের সাথে শনিবার বিকেল থেকে যোগ হয় তেজষ্ক্রিয়্তার আতঙ্ক। ফুকুশিমা পারমানবিক চুল্লির ১নং প্ল্যান্টে বিষ্ফোরণ ঘটলে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে প্ল্যান্টের আশেপাশের ২০ কিলোমিটার এলাকা থেকে সকল লোকজনকে সরিয়ে নেবার নির্দেশ দেয়া হয়। শনিবারও বিভিন্ন স্থানে থেকে থেকে আফটার শক অনুভূত হয়। এদের মধ্যে কয়েকটি বেশ জোরালো ছিলো। ভূমিকম্প ও সুনামিতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বাংলাদেশীদের এক বড় অংশ নিরাপদে রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন স্থানের আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। একটি সূত্র জানিয়েছে সেন্দাইয়ের উপকূলে কর্মরত দুই বাংলাদেশী নিখোঁজ রয়েছেন -তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শনিবারও সেন্দাইতে টেলিযোগাযোগ স্বাভাবিক না হওয়ায় সঠিক চিত্রটি পাওয়া যায়নি। কমিউনিটির সেন্দাই অফিস জানিয়েছে, সেখানে অবস্থানরত অন্যান্য প্রায় সকল বাংলাদেশীদের সাথেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। সকালের দিকে কয়েকজন নিখোঁজ থাকলেও পরে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। অন্যান্য স্থানে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশীরা নিরাপদেই আছেন বলে জানা গেছে। জাপানের টিভি চ্যানেলগুলোতে স্বাভাবিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন ভাষায় সেখানে ভূমিকম্পের উপর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
undefinedএদিকে আমেরিকা, চীন, ইউরোপিও কমিশন, বৃটেন, ফ্রান্স, দক্ষিন কোরিয়া, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ জাপানের এই বিপর্যয়ে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এসব দেশ বিভিন্ন ভাবে জাপানকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে। উপদ্রুত এলাকায় উদ্ধার কাজ পরিচালনায় জাপান আমেরিকার নিকট মার্কিন সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে। ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি পশ্চিম ও মধ্য জাপান থেকে ২০০০ সদস্যকে উত্তরের তিন ক্ষতিগ্রস্থ প্রিফেকচারে উদ্ধারকাজে মোতায়েন করেছে। যানবাহন সংকটে শুক্রবার রাতে টোকিওতে অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারেননি। টোকিওতে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী ভবন, কিছু বড় রেস্টুরেন্ট ও বানিজ্যিক ভবন আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য তাদের স্থানটিকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খুলে দেন। মোবাইল ফোন সার্ভিস বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় কয়েনবক্সগুলোকে বিনামূল্যে সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। শুক্রবারের ভূমিকম্প ১৯৯৫ সালের ১৭ জানুয়ারি কোবেতে আঘাত হানা 'দ্যা গ্রেট হানশিন' ভূমিকম্পের হাজার গুন বেশি শক্তিশালী ছিলো। (সূত্র: কমিউনিটি)