১১ এপ্রিল, ২০১১

সুনামির পর জনশুন্য শহরে একাকী



১১ই মার্চের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামির পর ৭৫ বছর বয়স্ক কুনিও শিগা একাই দিন কাটিয়েছেন তার ভূতুরে জনমানবহীন শহরে। শুক্রবার ফুকুশিমা দাইইচি বিদ্যুত কেন্দ্রের ২০ কিঃমিঃ এলাকার ভেতর রয়ে যাওয়া নিখোঁজদের অনুসন্ধানকালে ধ্বংসস্তুপ, কাদা আর ময়লার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। ভালোভাবে হাটতে পারেননা তিনি, জানেননা তার স্ত্রীর ভাগ্যে কি ঘটেছে। তার প্রতিবেশীরা সবাই তাকে ফেলে গেছে -কারন কর্তৃপক্ষ তেজস্ক্রিয়তার জন্য ফুকুশিম দাইইচি বিদ্যুত কেন্দ্রের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী সকলকে এলাকা ছেড়ে যেতে বলেছেন। কিন্তু তাকে উদ্ধার করতে কেউ আসেনি। সাংবাদিকদেরকে ঘরের সামনে দেখতে পেয়ে ভীত এবং অসংলগ্ন শিগা বলেন "সুনামির পর আপনাদের সাথেই প্রথম কথা বললাম।" তিনি জিজ্ঞাসা করেন, "আপনাদের কাছে খাবার কিছু আছে? আমি তার জন্য পয়সা দেব।" কয়েকটি এনার্জি ড্রিঙ্ক এবং এক লিটার পানি তিনি খুবই কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহন করেন। তার বাড়িটিই আশেপাশের বাড়ির গুলোর মধ্যে একমাত্র বাড়ি যেটি কোনমতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে ঘরের জিনিসপত্র সব উল্টে তছনছ হয়ে গেছে। তার প্রতিবেশীরা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন তারা তাড়াহুড়ার মধ্যে অনেক প্রতিবেশীর খোঁজই তারা করতে পারেননি। শিগার ঘরের খাবার দাবার প্রায় শেষ হয়ে গেছে। তিনি জানান, ভূমিকম্পের সময় তার স্ত্রী পাশেই ছিলেন কিন্তু পরে সুনামির পর শিগা আর তাকে দেখতে পাননি। তিনি জানান, তিনি দূর্যোগের পর থেকে একাকী দিন কাটিয়েছেন, বিদ্যুতবিহীন অন্ধকার ঘরে শেশ পর্যন্ত রেডিওর ব্যাটারিও শেষ হয়ে যায়। ময়লা মাখা শিগা জানান, তেজস্ক্রিয়ার জন্য এলাকা ছেড়ে যাবার সতর্কতা সম্পর্কে তিনি জানতেন কিন্তু তার পক্ষে হেঁটে ঘরের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয় এবং কাদার মধ্যে আটকে পড়া তার গাড়িও আর স্টার্ট নিচ্ছিলনা। শিগাকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। (সূত্র: কমিউনিটি, জাপান)