১৭ আগস্ট, ২০১১

তারেক মাসুদ নিজ গ্রামে সমাহিত

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদকে ফরিদপুরের নূরপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়েছে। বুধবার বাদ জোহর ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে বাড়ির আঙিনার পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। তারেকের ছোট ভাই হাবিবুর রহমান মাসুদ বাবু জানান, ক্যাথরিন মাসুদের দেখিয়ে দেওয়া বাড়ির উত্তর কোণের একটি জায়গায় তার ভাইকে সমাহিত করা হয়। গত ১৩ অগাস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তারেক মাসুদ। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান এটিএন নিউজের প্রধান সম্পাদক আশফাক মুনীরসহ আরো চার জন। তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিনও এতে আহত হন। তারেকের সহকারী প্রসূন রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুপুর ১২টায় তারেক মাসুদের লাশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাঙ্গায় আনা হয়। পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার আগে নূরপুর গ্রামের এ কৃতি সন্তানকে শ্রদ্ধা জানায় এলাকার মানুষ। সেখানে ছিলেন জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও। জহির রায়হান ও আলমগীর কবীরের পর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে যিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন, তিনি মাটির ময়নার পরিচালক তারেক মাসুদ। শিক্ষাজীবনের শুরুটা মাদ্রাসায় হলেও পরে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে 'আদম সুরত' নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করে চলচ্চিত্র অঙ্গনে হাতেখড়ি নেন তারেক। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র মুক্তির গান ও মুক্তির কথা (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। এরপর ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মাটির ময়না কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ছিলেন এ চলচ্চিত্রের সহপরিচালক। এরপর অন্তর্যাত্রা (২০০৬) ও রানওয়ে (২০১০) নামে আরো দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন মাসুদ ও ক্যাথরিন। 'কাগজের ফুল' নামে আরেকটি ছবি বানানোর কাজে হাত দিয়েছিলেন এই জুটি। লোকেশন দেখতে ১৩ অগাস্ট মানিকগঞ্জে যান তারা। সেখান থেকে ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ইতি ঘটে তারেকের ৫৫ বছরের জীবনের। (সূত্র: বিড নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম)