২৫ অক্টোবর, ২০১১

মৃত্যুর পূর্বে গাদ্দাফির উইল

মৃতুর কথা নিশ্চিত জেনেই গাদ্দাফি একটি উইল লিখে রেখে গেছেন। তিনি লিখেছেন, “এটা আমার উইল। আমি মুয়াম্মার বিন মুহাম্মদ বিন আব্দুস সালাম বিন হুমাইদ বিন আবু মানায়ার বিন হুমাইদ বিন নাইল আল ফুহসি গাদ্দাফি শপথ নিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল (তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, মুসলমান হিসেবেই আমি মৃত্যুবরণ করব।” উইলে তিনি আরো লিখেছেন, “হত্যা করা হলেও আমাকে যেন ইসলামী রীতিতে দাফন করা হয়। মৃত্যুর সময় যে পোশাকে আমি থাকব সে পোশাকেই গোসল না করিয়ে সিরতের (জন্মভূমি) মাটিতে স্বজনদের পাশেই যেন আমাকে দাফন করা হয়।” এর পরের লাইনে পরিবারের সদস্যদের প্রতি গাদ্দাফির পরম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ফুটে উঠেছে। তিনি লিখেছন, “আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের প্রতি যেন ভালো আচরণ করা হয়।”পরিবারের সদস্যদের পর দেশের জনগণের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে গাদ্দাফি লিখেছেন, “দেশের পরিচয় অর্জন, ইতিহাস ও পূর্বসূরী বীরদের সম্মান রক্ষা করা লিবিয়াবাসীর দায়িত্ব। লিবিয়ার জনগণের উচিত হবে না সেই স্বাধীনচেতা ও সেরা বীরদের সব অর্জন ধূলিস্যাৎ হতে দেয়া।” এ পর্যায়ে অনুগত যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে গাদ্দাফি লিখেছেন,”আমার সমর্থকদের প্রতি আহবান থাকবে, এ প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে নেয়ার এবং সেইসঙ্গে আজ, আগামীকাল ও ভবিষ্যতে যে কোনো সময় যে কোনো ধরনের বৈদেশিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর।” লিবিয়ার ওপর মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর শ্যেন দৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়ে মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে উইলে লিখেছেন, “বিশ্বের স্বাধীন জনতাকে জানাতে চাই, আমরা দরকষাকষি চালাতে পারতাম এবং দেশ বিকিয়ে দেয়ার বিনিময়ে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপদ ও শান্তির জীবনযাপন করতে পারতাম। এ ধরনের বহু প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। কিন্তু দেশরক্ষায় সৈনিকের সংগ্রামী পথই আমরা বেছে নিয়েছি, এটা আমাদের কর্তব্য ও সম্মান।” গাদ্দাফির উইলের শেষ অংশে লেখা হয়েছে, “এখনই আমরা জয়ী না হলেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রেখে যাচ্ছি সেই শিক্ষা যা তাকে দেশের সম্মান রক্ষার কাজে উদ্বুদ্ধ করবে। এই দেশ বিক্রির ঘটনা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বেঈমানি হিসেবে চিহ্নিত হবে, অন্যরা (পশ্চিমাবিশ্ব) যতই অন্যরকম বলে চালানোর চেষ্টা করুক না কেন।” (সূত্র: অনলাইন)