পাবনার প্রাচীন স্থাপনাশিল্পের অন্যতম জোড় বাংলা
মন্দির। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এমনকি দেশের বাইরে থেকে
পাবনায় বেড়াতে আসা লোকজন একবার হলেও ঘুরে যায় জোড় বাংলা মন্দিরটি। মন্দিরটি
পৌর এলাকার কালাচাঁদপাড়া মহল্লায় অবস্থিত। মন্দিরের কারণেই এ পাড়ার আরেক
নাম হয়েছে 'জোড় বাংলা পাড়া'। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো মন্দিরটির দৈঘ্য ১৬
হাত, প্রস্থ ১৪ হাত, উচ্চতা ২২ হাত এবং প্রাচীরের বেড় তিন হাত। মন্দিরটিতে
কোনো ছাদ নেই। দোচালা মন্দিরের দুই শেষপ্রান্ত উঁচু হয়ে একসঙ্গে মিশেছে।
দেয়ালগুলো অত্যন্ত প্রশস্ত হলেও কামরাগুলো খুব ছোট ছোট। দোচালা বাংলোর মতো
হওয়ায় মন্দিরটির নাম হয়েছে জোড় বাংলা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য লাল
পোড়ামাটির ইট দিয়ে তৈরি মন্দিরটির প্রতিটি ইটের গায়ে অসংখ্য দেব-দেবীর
মূর্তি খোদাই করা আছে। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন এ নিয়ে মতভেদ আছে।
কারো মতে ব্রজবল্লভ আবার কারো মতে ব্রজমোহন রায়চৌধুরী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা
করেন। আবার অনেক ইতিহাস বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্রজবল্লভ এবং ব্রজমোহন
রায়চৌধুরী একই ব্যক্তি। ইতিহাস বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী মুঘল সেনাপতি
মানসিং পাবনা শহরের নিকটবর্তী ছাতিয়ানী গ্রামে তাঁর আমলে সেনানিবাস
প্রতিষ্ঠা করেন। মানসিং-এর সেনানিবাসে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহকারী হিসেবে
নিয়োজিত ছিলেন ব্রজমোহন রায় বা ব্রজবল্লভ। সেই ব্রজমোহন বা ব্রজবল্লভ
সেনানিবাস থেকে বহু মূল্যবান ধনসম্পদ চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে পরবর্তী সময়ে
মনের অনুশোচনা থেকে মুক্তি পেতে এ মন্দির নির্মাণ করেন।