২৯ নভেম্বর, ২০১১

তৈরি হবে কৃত্রিম মস্তিষ্ক

মানব মস্তিষ্কের সব ধরনের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণাগারে তৈরি হবে কৃত্রিম মস্তিষ্ক। এই কৃত্রিম মস্তিষ্ক নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত রোগী। তৈরি হবে কল্পবিজ্ঞানে যেমনটি দেখায় তেমনি মানবসদৃশ নতুন প্রজন্মের রোবট। এতদিন ধরে যা ছিল অসাধ্য, স্বপ্ন এবং কল্পনা তা এবার বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির [এমআইটি] একদল গবেষক। তারা উদ্ভাবন করছেন এমন একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি, যা হুবহু মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নকল করতে পারবে। কৃত্রিম মস্তিষ্ক সম্পর্কে এমআইটির গবেষকরা জানান, আমাদের মস্তিষ্কে প্রায় ১০ হাজার কোটি নিউরন আছে। প্রতিটি নিউরন একটি আরেকটির সঙ্গে সংযুক্ত। আর এই সংযোগের নাম সিন্যাপস। এই সিন্যাপসের মাধ্যমেই মস্তিষ্কে সব ধরনের তথ্য আদান-প্রদান হয়ে থাকে। মূলত মস্তিষ্কের একটি একক সিন্যাপসের কার্যক্রমের অনুরূপ কাজ করতে সক্ষম একটি কম্পিউটার চিপ তৈরি করা হচ্ছে। মস্তিষ্কের সিন্যাপসের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রিত হয় একটি আয়ন-চ্যানেলে যা সোডিয়াম, পটাসিয়াম বা ক্যালসিয়ামের মতো আয়নের চলাচল নিশ্চিত করে। প্রচলিত কম্পিউটার সিস্টেমের চেয়ে এ চিপ অনেক বেশি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে। যেগুলো সিন্যাপসের সাহায্যে একটি অপরটির সঙ্গে যুক্ত থেকে তথ্য আদান-প্রদান প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। নতুন এই 'কৃত্রিম মস্তিষ্ক' চিপটি তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৪০০ ট্রানজিস্টর ব্যবহার করে। আর এসব ট্রানজিস্টরের মধ্যকার আন্তঃসংযোগের নকশাটি করা হয়েছে মস্তিষ্কের অনুরূপ। ব্রেনের প্রতিটি সেলের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের আদলে ট্রানজিস্টরের মধ্যে বিদ্যুৎ চালনা করা হয়। আর এতেই দেখা যায় নিউরনের প্রতিটি আয়নিক প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা চলে আসছে। তাদের সাফল্যে অবাক হয়েছেন অনেক নিউরন বিশেষজ্ঞ। প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন, এই চিপ কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে। পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ডিভাইস উদ্ভাবনে অবদান রাখবে। মস্তিষ্কের আয়ন চ্যানেলে আয়নগুলো যেভাবে প্রবাহিত হয়, কৃত্রিম চিপে তড়িৎ প্রবাহ হয় ঠিক সেভাবেই প্রবাহিত হবে। গবেষকরা ভিজ্যুয়াল প্রসেসিংয়ের মতো কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নিউরাল ফাংশন তৈরির কাজে এ চিপ ব্যবহার করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। মানবদেহের জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরি অঙ্গগুলোর সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগেও পরিবর্তন সূচিত হবে বলে আশা করছেন গবেষকরা।