৩০ মে, ২০১৩

ঘুম কন্যা

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের নিকোল ডিলিয়েন নাকি দিনে একটানা ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টা ঘুমান। সম্প্রতি একনাগাড়ে ৬৪ দিন ঘুমানোর রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
এটি ভাবার কারণ নেই যে, ১৭ বছরের এ তরুণী শখের বশে এতটা ঘুমচ্ছেন। এটি আসলে এক ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা।চিকিৎসকরা বলছেন, নিকোল স্লিপ ডিজঅর্ডার ‘ক্লেইন লেভাইন বা স্লিপিং বিউটি সিনড্রোমে’ ভুগছেন।বয়সন্ধিকালে এ রোগটি খুবই বিরল বলে জানান তারা।
অক্সফোর্ড জার্নাল অনুযায়ী,বিরল এ রোগের উপসর্গগুলো হলো- আক্রান্তরা কখনো পুরো সপ্তাহ, মাস বা এমনকি বছরজুড়েও ঘুমাতে পারে। এছাড়া, দ্বিধাদ্বন্দ্ব, দৃষ্টিবিভ্রম, শিশুসুলভ আচরণ, অতিমাত্রায় পানাহার এবং বেপরোয়া যৌনাকাঙ্ক্ষা এ রোগের অন্যতম উপসর্গ।   

নিকোল যখন একনাগাড়ে ৬৪ দিন ঘুমিয়েছিলেন তখন তার অজান্তেই পার হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’, বড়দিনসহ জীবনের নানা মুহূর্ত। থ্যাংস গিভিং ডে থেকে একটানা জানুয়ারি পর্যন্ত ঘুমিয়েছেন তিনি।
চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে দেখেছেন, এই অস্বাভাবিক ঘুমের পর নিকোল যখন জেগে ওঠেন তখন তিনি খানিকটা সময় দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন। হঠাৎ করেই বুঝে উঠতে পারেন না, এতদীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকার পর খেতে যাবেন নাকি টয়লেটে যাবেন।এমন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে ভুগতেই আবার ঘুমের মধ্যে হারিয়ে যান নিকোল।
নিকোলের মা ভিকি ডেলিয়েন জানান, তার মেয়ে দিনে ১৮ থেকে ১৯ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটায়। যখন সে খাওয়ার জন্য জেগে ওঠে তখনও ঘুমের মধ্যে হাঁটে।পরে এসব আর কিছু মনে করতে পারে না সে।
নিকোলের পরিবার তাকে অনেকবার হাসপাতালে নিলেও রোগটি সনাক্ত করা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছিলো। শেষ পর্যন্ত পেনসিলভানিয়ার পিটসবুর্গের অ্যালিগহেনি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিকোলের এ রোগ নির্ণয়ে সক্ষম হন। তারা নিকোলকে পরীক্ষা করে মেডিটেসনসহ (যোগ ব্যায়াম) বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।