বিয়ের জন্য দেখে গেছে ছেলেপক্ষ। তাদের পছন্দও হয়েছে। এবার পরিবার থেকে
ছেলে দেখার কথা। কিন্তু তার আগে নিজেই ছেলে হয়ে গেলেন বগুড়ার মিনু খাতুন
(১৮)।
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের গাংনগর পোড়ানগরী গ্রামে গত বৃহস্পতিবার এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে।
মিনুর মেয়ে থেকে ছেলেতে পরিণত হওয়ার খবর শুনে তাকে একনজর দেখার জন্য এখন মানুষের ঢল নেমেছে তার বাড়িতে।
জানা গেছে, দেউলী ইউনিয়নের গাংনগর পোড়ানগরী গ্রামের কৃষক আব্দুল কাফী ও
মনোয়ারা বেগমের পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে মিনু খাতুন পঞ্চম।
প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে ঘুমাতে যান মিনু।
মধ্যরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে তিনি বুঝতে পারেন তার শারীরিক পরিবর্তন ঘটেছে।
তারপর রাতে আর ঘুমাতে পারেননি তিনি।
পরদিন সকালে ঢাকায় থাকা তার বোন তাপসীকে মোবাইল ফোনে মিনু তার এ
পরিবর্তনের কথা জানান। তাপসী সে কথা তার বাবা-মাকে জানান এবং বাড়িতে চলে
আসেন। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে মৌলভী ডেকে শনিবার মিনুর নাম পরিবর্তন করে
রাখা হয় আব্দুল মাজেদ।
আব্দুল মাজেদের (মিনু) ভগ্নিপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, সে মাধ্যমিক পাশ করে
কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু অর্থাভাবে পড়ালেখা করতে পারেনি। তারপর থেকে
বাড়ির কাজে মাকে সহযোগিতা করতো।
কিছুদিন আগে পরিবার থেকে মিনুকে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেজন্য গত
বুধবার পাশের গ্রাম সৈয়দপুর থেকে ছেলেপক্ষ এসে তাকে দেখে যায় এবং পছন্দ
করে। কিছুদিন পরেই মিনুর পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে দেখতে যাওয়ার কথা ছিলো।
কিন্তু তার আগেই ঘটে এ ঘটনা।
মিনুর দীর্ঘদিনের বান্ধবী বৃষ্টি জানায়, স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ে
তারা একসঙ্গে লেখাপড়া করেছে। কখনও তার আচার-আচারণে পুরুষালি ভাব দেখা
যায়নি।
এদিকে মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর হওয়া মিনু ওরফে আব্দুল মাজেদের এখন ইচ্ছা
কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অভাবের সংসারে হাল ধরবেন। বিয়ে করে সুখী একটি
সংসার করার ইচ্ছার কথাও প্রকাশ করেন তিনি।
মিনু ওরফে আব্দুল মাজেদের বাবা আব্দুল কাফী বলেন, ‘আল্লাহর কৃপায় আমার এখন
চার মেয়ে ও দুই ছেলে। আল্লাহ যা ভালো মনে করেছেন সেটা আমার জন্যও ভালো।
উল্লেখ্য, গত মাসে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বনতেতুলিয়া
মণ্ডলপাড়ায় একইভাবে আক্কাস আলীর ছেলে লালচাঁন মিয়া (১৮) ছেলে থেকে মেয়েতে
রূপান্তরিত হন। এরপর তার নাম রাখা হয় লালবিবি